প্রশ্নফাঁস, মন্ত্রীদের সুপারিশে ক্যাডার নিয়োগসহ বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের পর এবার আলোচিত ৪৪, ৪৫ ও ৪৬তম বিসিএস নিয়ে হার্ডলাইন নিয়েছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) রাতে পিএসসির জনসংযোগ কর্মকর্তা এস এম মতিউর রহমানের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান ও আটজন সদস্যবিশিষ্ট কমিশনের সভায় ৪৪, ৪৫ ও ৪৬তম বিসিএস পরীক্ষাসহ বিভিন্ন নন-ক্যাডার পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সন্দেহ সংক্রান্ত সকল বিষয় গুরুত্বসহকারে আলোচনা করা হয়। কমিশন উল্লিখিত পরীক্ষাসমূহের স্বচ্ছতা, ন্যায্যতা ও নিরপেক্ষতা বজায় রাখার স্বার্থে নিম্নলিখিত সিদ্ধান্তসমূহ গ্রহণ করেছে।
৪৪তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ১১ হাজার ৭৩২ জন প্রার্থীর মধ্যে ৩ হাজার ৯৩০ জন প্রার্থীর মৌখিক পরীক্ষা গত ১৮ জুলাই পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়েছিল। গত ২৫ আগস্ট মৌখিক পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। এরপর ৮ অক্টোবর তৎকালীন কমিশন পদত্যাগ করে। মৌখিক পরীক্ষায় সমমান বজায় রাখার জন্য পূর্বের কমিশন কর্তৃক গৃহীত ৪৪তম বিসিএস-২০২১-এর আংশিক অর্থাৎ ৩ হাজার ৯৩০ জন প্রার্থীর গৃহীত মৌখিক পরীক্ষা বাতিল করে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সকল প্রার্থী অর্থাৎ ১১ হাজার ৭৩২ জন প্রার্থীর মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। শিগগির মৌখিক পরীক্ষার তারিখ জানানো হবে।
পিএসসির সিদ্ধান্ত মোতাবেক-৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারির ফল পুনরায় প্রকাশ করা হবে। তবে এক্ষেত্রে প্রথম দফায় যারা নির্বাচিত হয়েছেন, তারা বাদ পড়বেন না। তাদের সঙ্গে আরও ১০ হাজার ৬৩৮ জন প্রার্থীকে নির্বাচিত করে লিখিত পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে। পিএসসির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফলাফল গত ৯ মে প্রকাশিত হয়। এ পরীক্ষায় ১০ হাজার ৬৩৮ জন প্রার্থীকে লিখিত পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত করা হয়। এক্ষেত্রে সম্ভাব্য বৈষম্য দূরীকরণের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে নির্বাচিত প্রার্থীদের সঙ্গে আরও সমসংখ্যক প্রার্থী লিখিত পরীক্ষার জন্য যোগ্য বিবেচনা করে পুনরায় ফলাফল ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
পিএসসি জানায়, ৪৫তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছিল গত জানুয়ারিতে। সেই হিসাবে প্রায় সব খাতা মূল্যায়ন শেষ দিকে। তবে স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতা বজায় রাখার স্বার্থে নতুন কমিশন সব খাতা তৃতীয় পরীক্ষকের কাছে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ প্রসঙ্গে পিএসসির বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ৪৫তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়নের কাজ চলমান। দ্বিতীয় পরীক্ষক কর্তৃক মূল্যায়নের কাজও প্রায় সমাপ্তির পথে। লিখিত পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়নে স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতা বজায় রাখার স্বার্থে নতুন কমিশন সকল উত্তরপত্র তৃতীয় পরীক্ষকের নিকট প্রেরণ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এছাড়া প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ ওঠা বাংলাদেশ রেলওয়ের (উপ-সহকারী প্রকৌশলী) নন-ক্যাডার পদে অনুষ্ঠিত লিখিত পরীক্ষার বিষয়ে পিএসসি পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও পর্যালোচনা করছে। খুব শিগগির এই পরীক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।