টেকসই অর্থায়ন ও পরিবেশবান্ধব ব্যাংকিং কার্যক্রমে অগ্রণী ভূমিকার স্বীকৃতি হিসেবে দেশের শীর্ষ ১০ ব্যাংকের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে ইস্টার্ন ব্যাংক পিএলসি (ইবিএল)। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স রিপোর্ট অনুযায়ী— ব্যাংকটি সামগ্রিক টেকসই কার্যক্রম, গ্রিন ইনভেস্টমেন্ট ও জলবায়ু ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় নজরকাড়া সাফল্য অর্জন করেছে।
এ অর্জনকে ‘ব্যবসার বাইরেও সমাজ ও পরিবেশের প্রতি দায়বদ্ধতার প্রতিফলন’ বলে অভিহিত করেছেন ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও আলী রেজা ইফতেখার। বাংলা ট্রিবিউনকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘এটি কেবল একটি অর্জন নয়, বরং আমাদের দীর্ঘমেয়াদি প্রতিশ্রুতি ও কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গির স্বীকৃতি।’
সাক্ষাৎকারে তিনি আরও তুলে ধরেন, কীভাবে পুনঃঅর্থায়ন, কার্বন নির্গমন পরিমাপ, গ্রিন লোন, ডিজিটাল ব্যাংকিং এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে ঝুঁকি মূল্যায়নের মাধ্যমে ইবিএল টেকসই ব্যাংকিংয়ের একটি কার্যকর মডেল তৈরি করেছে— যা এখন দেশের ব্যাংকিং খাতের জন্য একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।
আলী রেজা ইফতেখার: এই স্বীকৃতি নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়। তবে আমরা এটিকে শুধু একটি অর্জন হিসেবে দেখছি না— এটি আসলে ইস্টার্ন ব্যাংক পিএলসি’র পরিবেশ, সমাজ এবং সুশাসনের প্রতি আমাদের যে দীর্ঘমেয়াদি অঙ্গীকার রয়েছে, তার একটি সুস্পষ্ট প্রমাণ। এটি এমন এক স্বীকৃতি, যা আমাদের সবগুলো বিভাগ, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং অংশীদারদের সম্মিলিত পরিশ্রম ও কৌশলগত পরিকল্পনার ফল।
বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিবছর যেভাবে ব্যাংকগুলোর টেকসই কার্যক্রম মূল্যায়ন করে, সেখানে আমাদের এই অর্জন দেখায় যে, আমরা শুধুমাত্র ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধির দিকেই নজর দিচ্ছি না, বরং সমাজ ও পরিবেশের দায়িত্বপূর্ণ ব্যবস্থাপনাও সমান গুরুত্ব দিয়ে করছি। এই স্বীকৃতি আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে আরও অনুপ্রেরণা যোগাবে।
আলী রেজা ইফতেখার: আমার বিশ্বাস, আমাদের অর্জনের পেছনে নির্দিষ্ট কিছু কৌশলগত সিদ্ধান্ত অত্যন্ত কার্যকর ছিল। প্রথমেই বলতে হয়, আমরা সবুজ ও টেকসই অর্থায়নের ক্ষেত্রে একটি সুস্পষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়েছি। ২০২৪ সালে আমাদের টার্ম লোনের ৩৫.২৪ শতাংশ অর্থই সবুজ প্রকল্পে বরাদ্দ করেছি, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। এই প্রবৃদ্ধি শুধুই সংখ্যার বিষয় নয়— এটি আমাদের চিন্তার গভীরতা ও প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন।
আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের সবুজ পুনঃঅর্থায়ন স্কিমের আওতায় ২০০ কোটিরও বেশি টাকার পুনঃঅর্থায়ন নিশ্চিত করতে পেরেছি। সেইসঙ্গে, ২০২৩ সাল থেকেই আমরা আমাদের অর্থায়িত পোর্টফোলিওর কার্বন নির্গমন পরিমাপ করছি, যা দেশের ব্যাংকিং খাতে একটি পথপ্রদর্শক পদক্ষেপ।
আরও উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, আমরা আইএফসি ও ডিইজি’র সহায়তায় একটি জলবায়ু ঝুঁকি মূল্যায়ন পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি, যার মাধ্যমে আমাদের অভ্যন্তরীণ টিমের সক্ষমতা বৃদ্ধি, প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ এবং ঝুঁকি মূল্যায়ন টুল ব্যবহারে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। পাশাপাশি, আমরা ডিএইচএল-এর গো গ্রিন প্ল্যাস উদ্যোগে অংশ নিয়েছি, যেখানে ট্রেড ডকুমেন্ট পরিবহনে সাসটেইনেবল এভিয়েশন ফুয়েল (এসএএফ) ব্যবহারের মাধ্যমে কার্বন নির্গমন প্রায় ৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।
আলী রেজা ইফতেখার: আমরা পরিবেশবান্ধব এবং সমাজ-সহায়ক প্রকল্প ও উদ্যোক্তাদের অগ্রাধিকার দিতে সবসময়ই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থেকেছি। নবায়নযোগ্য শক্তির ক্ষেত্র যেমন- সৌর বিদ্যুৎ, বায়োগ্যাস ভিত্তিক উদ্যোগ— নিয়মিতভাবে আমাদের অর্থায়নের আওতায় এসেছে। তাছাড়া, ইটিপি স্থাপন, পানি সাশ্রয়ী প্রযুক্তির ব্যবহার কিংবা জ্বালানি সাশ্রয়ী যন্ত্রপাতি স্থাপনের মতো পরিবেশগতভাবে দায়িত্বশীল কার্যক্রমে আমরা উদ্যোক্তাদের সক্রিয়ভাবে সহায়তা দিয়ে আসছি।
গ্রিন বিল্ডিং ও পরিবেশসম্মত কারখানা গঠনে আমাদের বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা এমনকি পরিবেশবান্ধব যানবাহন, ইলেকট্রিক ভেহিকেল এবং লো-কার্বন ট্রান্সপোর্ট অবকাঠামোতেও আগ্রহী উদ্যোক্তাদেরও প্রাধান্য দিয়ে অর্থায়ন করছি।
নারী উদ্যোক্তাদের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে আমরা বিশেষভাবে নারী উদ্যোক্তা অর্থায়নের কর্মসূচি পরিচালনা করছি, যাতে তারা টেকসই ব্যবসা গড়ে তুলতে সক্ষম হন। এছাড়া এসএমই গ্রাহকদের মধ্যে যারা পরিবেশবান্ধব ও সামাজিক প্রভাব সৃষ্টিকারী ব্যবসায় যুক্ত, তাদের জন্য আমরা সুদ হ্রাস, দীর্ঘমেয়াদি ঋণ এবং পুনঃঅর্থায়নের সুবিধা প্রদান করছি।
আমাদের সামাজিক অর্থায়নের একটি বড় অংশ আমরা সরাসরি ব্যাংকের নিজস্ব উদ্যোগ এবং এনজিও অংশীদারদের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করছি, যেন প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে সাশ্রয়ী ও অন্তর্ভুক্তিমূলক আর্থিক সেবা পৌঁছে দেওয়া যায়। আমাদের লক্ষ্য খুবই স্পষ্ট— যেকোনও প্রকল্প বা উদ্যোগ টেকসই উন্নয়নের পথে সমাজ ও পরিবেশে ইতিবাচক প্রভাব রাখতে পারে, আমরা সেটির সঙ্গেই থাকতে চাই।
আলী রেজা ইফতেখার: ইস্টার্ন ব্যাংক পিএলসির (ইবিএল) কাছে সবুজ ব্যাংকিং এখন আর শুধু একটি উদ্যোগ নয়— এটি আমাদের কোর বিজনেস স্ট্র্যাটেজির অন্যতম প্রধান স্তম্ভ। আমরা মনে করি, একটি আধুনিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাফল্য তখনই পূর্ণতা পায়, যখন তা আর্থিক প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি পরিবেশগত ও সামাজিক দায়বদ্ধতাকে সমান গুরুত্ব দেয়।
আমাদের প্রধান কার্যালয় একটি পরিবেশবান্ধব ‘গ্রিন হেড অফিস’ হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। এখানে রেইনওয়াটার হারভেস্টিং, অনসাইট ওয়াটার ও ওয়েস্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট এবং সোলার গ্লাস ব্যবহার করে প্রতিদিন প্রায় ১৬ কিলোওয়াট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। ভবনের নকশায় প্রাকৃতিক আলো ও বায়ু চলাচলের সর্বোচ্চ সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। পাশাপাশি, অফিসে মোশন সেন্সর লাইটিং, এনার্জি-স্মার্ট এসি সেটিংস এবং হাইব্রিড গাড়ির ব্যবহার আমাদের জ্বালানি সাশ্রয়ী মানসিকতার প্রতিফলন।
আমরা একটি প্লাস্টিক-মুক্ত অফিস পরিবেশ গড়ে তুলেছি, যেখানে প্লাস্টিক বোতল ও ফোল্ডারের ব্যবহার সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করা হয়েছে। একইসঙ্গে পেপারলেস ব্যাংকিং সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠায় আমরা সচেষ্টভাবে কাজ করে যাচ্ছি। কেবল এলসি প্রসেসিং প্রক্রিয়াতেই আমরা কাগজ ব্যবহার ৪০-৪৫ শতাংশ কমিয়ে বছরে প্রায় ১০ লাখের বেশি শিট সাশ্রয় করছি। ই-লার্নিং ও ই-সার্টিফিকেশন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারের মাধ্যমে অতিরিক্ত ২ লাখের বেশি শিট কাগজ বাঁচানো সম্ভব হয়েছে। ই-লিভ ও ই-এপ্রেইজাল চালুর মাধ্যমে পুরো অফিসে কাগজবিহীন কার্যক্রম বাস্তবায়িত হচ্ছে।
ডিজিটাল ব্যাংকিং খাতে আমাদের অগ্রগতি চোখে পড়ার মতো। ‘ইবিএল কানেক্ট’ এর মাধ্যমে বছরে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকার বেশি বেতন বিতরণ করা হচ্ছে এবং ‘স্কাই পে’ প্ল্যাটফর্মে এক কোটিরও বেশি ট্রানজেকশন সম্পন্ন হয়েছে। বিশেষভাবে এনআরবি (বিদেশে অবস্থানরত গ্রাহক) অ্যাকাউন্ট খোলার প্রক্রিয়া ১০০ শতাংশ অনলাইনভিত্তিক করা হয়েছে, যাতে তারা বিশ্বের যেকোনও প্রান্ত থেকে সহজেই ব্যাংকিং সুবিধা নিতে পারেন।
সবশেষে, আমরা স্কোপ ১, ২ ও ৩ অনুযায়ী আমাদের কার্বন নির্গমন নিয়মিতভাবে পরিমাপ করছি এবং বাংলাদেশ ব্যাংক ও আইএফসি-এর পরিবেশ ও সামাজিক ঝুঁকি মূল্যায়নের মানদণ্ড অনুযায়ী, আমরা ঝুঁকিপূর্ণ প্রকল্পসমূহে পরিবেশগত ও সামাজিক যাচাই-বাছাই (ইএসডিডি) কার্যকরভাবে সম্পাদন করছি। ব্যাংকিংয়ের এই পরিপূর্ণ কাঠামোর মাধ্যমে আমরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি টেকসই ও দায়িত্বশীল ব্যাংকিং সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠায় দৃঢ়ভাবে এগিয়ে চলেছি।
আলী রেজা ইফতেখার: ইস্টার্ন ব্যাংক পিএলসি টেকসই উন্নয়নকে একটি সম্মিলিত প্রচেষ্টা হিসেবে বিবেচনা করে। আমরা শুধু নিজেদের পথচলায় সন্তুষ্ট নই, বরং আমাদের গ্রাহক ও ব্যবসায়িক অংশীদারদেরও এই যাত্রায় অংশীদার করতে সচেষ্ট। এ লক্ষ্যে আমরা কেবল আর্থিক সহায়তায় সীমাবদ্ধ থাকিনি। টেকসই চিন্তাভাবনা ও চর্চার জন্য একটি সক্রিয় প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছি।
পরিবেশবান্ধব ও সামাজিকভাবে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে— এমন প্রকল্পগুলোতে আমরা কম সুদে ও দীর্ঘমেয়াদি গ্রিন লোন সুবিধা প্রদান করছি, যেখানে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো, যেমন- ডিইজি, এফএমও, এডিবি প্রভৃতি আমাদের পাশে রয়েছে। একইসঙ্গে, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিফাইন্যান্স স্কিমগুলো নির্ধারিত প্রকল্পের জন্য ব্যবহার করে আমরা উদ্যোক্তাদের প্রাথমিক ব্যয় কমিয়ে কার্যক্রম শুরু করার সুযোগ করে দিচ্ছি।
আমাদের এসএমই, নারী উদ্যোক্তা ও করপোরেট ক্লায়েন্টদের জন্য পরিবেশ ও সামাজিক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, টেকসই ব্যবসার কৌশল এবং ইএসজি অনুশীলন নিয়ে নিয়মিতভাবে ওয়ার্কশপ, প্রশিক্ষণ ও কারিগরি সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া, কিছু ক্লায়েন্টের সঙ্গে আমরা যৌথভাবে কার্বন নির্গমন হ্রাস এবং জলবায়ু বিষয়ক প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি— যা তাদের ব্যবসায়িক মডেলকে আরও দায়িত্বশীল ও টেকসই করে তুলছে।
আলী রেজা ইফতেখার: এই স্বীকৃতি একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে—ব্যাংকিং খাত এখন আর কেবল মুনাফাভিত্তিক নয়, বরং পরিবেশ ও সমাজের প্রতি দায়িত্ব পালনের একটি কার্যকর মাধ্যম হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে। সময়ের দাবি হলো— আধুনিক ব্যবসায়িক কৌশলের মূলধারায় টেকসইতা ও ইএসজি (পরিবেশ, সমাজ ও সুশাসন) ফ্যাক্টরগুলোর অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করা।
আমাদের এ অর্জন দেশের অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে অনুপ্রাণিত করবে, যেন তারা শুধুমাত্র আর্থিক প্রবৃদ্ধির সীমায় আবদ্ধ না থেকে বৃহত্তর সামাজিক ও পরিবেশগত প্রভাবের দিকেও মনোযোগ দেয়। কারণ, বর্তমান যুগের গ্রাহক ও বিনিয়োগকারীরা আগের চেয়ে অনেক বেশি সচেতন— তারা শুধু মুনাফা নয়, বরং দায়িত্বশীলতা, স্বচ্ছতা এবং টেকসই মূল্যবোধ খোঁজেন।
আলী রেজা ইফতেখার: আমরা ভবিষ্যৎকে আরও দূরদর্শীভাবে দেখতে চাই। আমাদের পরিকল্পনায় রয়েছে পরিবেশবান্ধব পণ্য চালুর উদ্যোগ, যার মধ্যে রয়েছে গ্রিন ডিপোজিট ও গ্রিন অ্যাসেট পণ্য। এর মাধ্যমে গ্রাহকরা পরিবেশবান্ধব খাতে তাদের আমানত রাখতে পারবেন এবং ব্যাংক সেই অর্থ পরিবেশসম্মত প্রকল্পে বিনিয়োগ করবে।
আমরা আমাদের জিএইচজি অ্যাকাউন্টিং পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়নের পথে রয়েছি, যাতে স্কোপ ১, স্কোপ ২, স্কোপ ৩ -এর আওতায় সব ধরনের কার্বন নির্গমন সুনির্দিষ্টভাবে পরিমাপ ও রিপোর্ট করা যায় এবং সেই অনুযায়ী নির্গমন হ্রাসের পরিকল্পনা কার্যকর করা সম্ভব হয়।
আইএফসি-এর সহায়তায়, আমরা দেশের ব্যাংকিং খাতে প্রথমবারের মতো ক্লাইমেট রিস্ক ডায়গনোস্টিক অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট মডেল তৈরি করছি, যা আমাদের ঝুঁকি মূল্যায়ন প্রক্রিয়ায় একটি নতুন দিক উন্মোচন করবে। এর পাশাপাশি, ডিইজি ও জেআইএম এর ক্লাইমেট মডিউল ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা জলবায়ু ঝুঁকি স্কোর নির্ধারণ এবং উপযুক্ত ঝুঁকি প্রশমন পরিকল্পনা তৈরি করছি।
এছাড়া, আইএফআরএস এস১ ও এস ২ রিপোর্টিংয়ের মাধ্যমে আমরা পরিবেশ ও জলবায়ু সংক্রান্ত তথ্যাবলি পূর্ণাঙ্গভাবে প্রকাশ করছি— যা আমাদের আরও প্রস্তুত করবে ভবিষ্যতের বাজার, বিনিয়োগকারীর চাহিদা এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য।
আলী রেজা ইফতেখার: হ্যাঁ, আমরা আমাদের গ্রিন অর্থায়নের জন্য একটি সুস্পষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি। বর্তমানে আমাদের মোট টেকসই অর্থায়নের মধ্যে প্রায় ৩৫ শতাংশ গ্রিন ফাইন্যান্স রয়েছে এবং আমাদের লক্ষ্য যত দ্রুত সম্ভব এই অনুপাত বাড়িয়ে অন্তত ৫০ শতাংশে উন্নীত করা। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে আমরা সেক্টরভিত্তিক টার্গেট নির্ধারণ করছি— যাতে করে কার্বন হ্রাসের সর্বোচ্চ সম্ভাবনাময় খাতগুলোকে চিহ্নিত করে সেখানে ফোকাসড ও প্রাধান্যভিত্তিক বিনিয়োগ নিশ্চিত করা যায়। জাতীয়ভাবে নির্ধারিত কার্বন নির্গমন হ্রাসের লক্ষ্যমাত্রাকে সামনে রেখে আমরা পরিবেশবান্ধব অর্থায়ন ক্রমান্বয়ে বাড়ানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। এর মাধ্যমে আমরা শুধু আমাদের ব্যাংকের টেকসইতা নয়, দেশের সামগ্রিক জলবায়ু লক্ষ্য অর্জনেও সক্রিয় ভূমিকা রাখতে পারব বলে বিশ্বাস করি।