মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদকে আগামী জুলাইয়ে তার শততম জন্মদিন উপলক্ষে অগ্রিম শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আগামী ১০ জুলাই মাহাথির মোহাম্মদ ১০০ বছরে পদার্পণ করবেন।
বৃহস্পতিবার টোকিও’র ইম্পেরিয়াল হোটেলে নিক্কেই ফোরাম ‘ফিউচার অব এশিয়া’ সম্মেলনের ফাঁকে মাহাথির প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন এবং তাদের দীর্ঘকালের বন্ধুত্বের স্মৃতিচারণ করেন।
মাহাথিরকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি আপনাকে শততম জন্মদিনের অগ্রিম শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।’ মাহাথির মোহাম্মদ ১৯৮১ থেকে ২০০৩ এবং পরে ২০১৮ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।
প্রায় ৪০ মিনিটব্যাপী আলোচনায় তারা পারস্পরিক আগ্রহের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন, যার মধ্যে ছিল বাংলাদেশের আসিয়ান সদস্য হওয়ার আকাঙ্ক্ষা এবং রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন।
বাংলাদেশ কয়েক বছর আগে আসিয়ানের খাতভিত্তিক সংলাপের সহযোগী সদস্য হওয়ার জন্য আবেদন করেছিল, যাতে ভবিষ্যতে পূর্ণ সদস্যপদ লাভ করা যায়।বর্তমানে মালয়েশিয়া দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় এই জোটের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছে।
প্রধান উপদেষ্টা মাহাথিরকে বলেন, ‘আমাদের আসিয়ান সদস্য হতে মালয়েশিয়ার সমর্থন প্রয়োজন।’ মাহাথির মোহাম্মদ তার শাসনামলে আসিয়ানকে একটি শক্তিশালী আঞ্চলিক সংস্থা হিসেবে গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, বাংলাদেশ মালয়েশিয়ার প্রতি কৃতজ্ঞ। কারণ, দেশটি বিভিন্ন খাতে লাখ লাখ বাংলাদেশিকে কর্মসংস্থানের সুযোগ দিয়েছে।
তিনি উল্লেখ করেন, ‘বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামের মানুষ মালয়েশিয়া সম্পর্কে জানে, কারণ মানুষ দেশটিতে কাজ করতে যায়।’
মাহাথির বলেন, অনেক বাংলাদেশি মালয়েশিয়ায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন এবং উদ্যোক্তা হিসেবে সফল হচ্ছেন।
মাহাথির স্মরণ করেন, কীভাবে তার ‘লুক ইস্ট’ নীতির কারণে মালয়েশিয়া সমৃদ্ধ হয়েছিল এবং বাংলাদেশকেও অনুরূপ নীতি গ্রহণের পরামর্শ দেন।
প্রধান উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশও মালয়েশিয়ার প্রতিবেশী দেশ ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বাড়ানোর চেষ্টা করছে, যদিও ইন্দোনেশিয়া এখনো বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের কাছে পরিচিত নাম নয়।
প্রফেসর ইউনূস মাহাথিরকে অনুরোধ করেন, তিনি যেন তার প্রভাব খাটিয়ে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সহায়তা করেন। তিনি মাহাথিরকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণও জানান।
মাহাথির বলেন, যদি তার চিকিৎসকরা অনুমতি দেন তাহলে তিনি এই আমন্ত্রণ গ্রহণ করবেন। চিকিৎসকরা মাহাথিরের শারীরিক অবস্থার কারণে তার ভ্রমণ সীমিত রেখেছেন।