চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে এক যুবকের ‘আপত্তিকর ছবি’ সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করাকে কেন্দ্র করে সুন্নি জনতা ও কওমিপন্থিদের মুখোমুখি অবস্থান উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন। আটক করা হয়েছে অভিযুক্ত যুবককে।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাতে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মুহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মুমিনের সই করা এক আদেশে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়।
আদেশে বলা হয়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ, জনসাধারণের জীবন ও সম্পদ রক্ষা এবং শান্তিশৃঙ্খলা স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে হাটহাজারী উপজেলাধীন মীরের হাট থেকে এগারো মাইল সাবস্টেশন পর্যন্ত এবং উপজেলা গেট থেকে কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, হাটহাজারী পর্যন্ত রাস্তার উভয় পার্শ্বে এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় শনিবার রাত ১০টা থেকে আগামীকাল (রোববার) বিকেল ৩টা পর্যন্ত ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৯৮৮ এর আওতায় ১৪৪ ধারায় এ আদেশ জারি করা হলো।
এসময়ে উল্লিখিত এলাকায় সব প্রকার সভা-সমাবেশ বিক্ষোভ মিছিল, গণজমায়েত, বিস্ফোরকদ্রব্য, আগ্নেয়াস্ত্র ও সকল প্রকার দেশি অস্ত্র ইত্যাদি বহনসহ সংশ্লিষ্ট এলাকায় পাঁচ বা ততোধিক ব্যক্তির একত্রে অবস্থান কিংবা চলাফেরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয় আদেশে।
জানা যায়, জশনে জুলুসে যাওয়া গাড়িবহরের এক যুবক হাটহাজারী বড় মসজিদ লক্ষ্য করে আপত্তিকর অঙ্গভঙ্গি করে একটি ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেন। ছবিটি ছড়িয়ে পড়লে বিকেলে দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী বড় মাদরাসার শিক্ষার্থী ও কওমি লোকজন ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান। পরে ফটিকছড়ি থানা পুলিশ ওই যুবককে আটক করে।
সন্ধ্যার পর দুই পক্ষ একে অপরের বিরুদ্ধে ঢিল ছোড়াছুড়ির অভিযোগ করে। একপর্যায়ে শিক্ষার্থী ও কওমি লোকজন হাটহাজারী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করেন।
পরে মাদরাসার শিক্ষার্থী ও কওমি লোকজন মাদরাসার সামনে অবস্থান নেন। অন্যদিকে সুন্নি জনতা অবস্থান নেন হাটহাজারীর কাচারি সড়কে। উভয়পক্ষ টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। এতে হাটহাজারী-খাগড়াছড়ি সড়ক বন্ধ হয়ে যায়। ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনায় উভয় পক্ষের অনেকে আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
এর আগে শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঘটনায় জড়িত আরিয়ান ইব্রাহীম (২০) নামে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। ষোলশহর জশনে জুলুস থেকে ফেরার পথে ফটিকছড়ি পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের শফিকিয়া দরবার শরিফ এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। আটক ইব্রাহীম ওই এলাকার মৃত মো. মুছার ছেলে।
আরিয়ান নিজেকে ফটিকছড়ি পৌর ছাত্রদলের ৩ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি পরিচয় দিলেও পৌর ছাত্রদলের সভাপতি একরাম উল্লাহ চৌধুরী জাগো নিউজকে জানিয়েছেন, আরিয়ান ছাত্রদলের কেউ নন। তিনি সংগঠনের নাম ব্যবহার করে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। এ বিষয়ে সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রশাসনকে আইনগত পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।\