সামনের দৃশ্যপট কেমন হবে দেশের

সামনের দৃশ্যপট কেমন হবে দেশের

নিজস্ব প্রতিবেদক : December 01, 2024

আমরা নির্বাচন দিয়ে দেবো। সংবিধান সংস্কারও একটি প্রধান প্রশ্ন। যদিও বিএনপি’র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এটি নির্বাচিত সরকারের কাজ।

এবার সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদ কত দিন? নির্বাচনই বা কবে হবে।

বিএনপি’র পক্ষ থেকে বারবার দাবি করা হচ্ছে, নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করার। সরকারের পক্ষ থেকে এখনো স্পষ্ট করে এ ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি। একজন উপদেষ্টা একবার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, ২০২৫ সালের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে। পরে অবশ্য এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। তিনি একটি ব্যাখ্যা দেন। আরেকটি প্রধান প্রশ্ন হচ্ছে, আওয়ামী লীগ কি নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ পাবে? ছাত্র নেতৃত্বের একাংশ এবং কোনো কোনো মহল থেকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি উঠেছে। তবে বিএনপি বা জামায়াতের মতো প্রধান দলগুলো এ ব্যাপারে সায় দেয়নি। সরকারও রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থান মেনে নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে। 

সামনের দৃশ্যপট কেমন হবে?

নানা গুজবে ভাসছে দেশ। ভারত থেকে চলছে বিরামহীন অপপ্রচার। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এসব প্রচারণার কিছু প্রভাব এরইমধ্যে দেখা যাচ্ছে। দ্রব্যমূল্য এখনও নিয়ন্ত্রণহীন। সাধারণ মানুষের কাছে এটিই প্রধান ইস্যু। সরকারের পক্ষ থেকে নানা পদক্ষেপের কথা বলা হলেও বাজারে তার তেমন কোনো প্রভাব নেই। সাম্প্রতিক ইস্যুগুলো নিয়ে সরকার এরইমধ্যে বিএনপি এবং জামায়াতের সঙ্গে আলোচনা করেছে। এসব আলোচনায় জাতীয় ঐকমত্যের কথা বলা হয়েছে। যদিও সে ঐকমত্য কেমন হবে তা স্পষ্ট নয়। বিএনপি যতো সম্ভব দ্রুত একটি নির্বাচন চায়। বর্তমানে নির্বাচন হলে দলটির বড় জয়ের সম্ভাবনাই বেশি। নির্বাচনে বিলম্ব হলে পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয় এ নিয়ে বিএনপি’র মধ্যে একধরনের শঙ্কা রয়েছে। দলটির বিবেচনায় ওয়ান-ইলেভেনের অভিজ্ঞতাও রয়েছে। বিএনপি’র পক্ষ থেকে দ্রুত নির্বাচনের জন্য সরকারের ওপর এক ধরনের চাপ তৈরি করা হচ্ছে। জামায়াত অবশ্য নির্বাচন নিয়ে তাড়াহুড়া করছে না। অন্যদিকে, ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া নেতারা সংস্কারের ওপর জোর দিচ্ছেন। তারা নতুন কোনো রাজনৈতিক দল গঠন করেন কি-না সে আলোচনাও রয়েছে। এরমধ্যে ছাত্রদের সমর্থিত নাগরিক কমিটি বিভিন্ন অঞ্চলে কমিটি দিচ্ছে। সমন্বয়ক কমিটিও পুনর্গঠন হচ্ছে জেলায় জেলায়। তবে বাংলাদেশে এ ধরনের দল হলেও তা বড় কোনো প্রভাব রাখতে পারবে কি-না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। অতীত অভিজ্ঞতা তাই বলে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আওয়ামী লীগ নেতাদের বিচার শুরু হলে দৃশ্যপটে বড় পরিবর্তন আসতে পারে কেউ কেউ এমনটা ইঙ্গিত দিচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে আগামীদিনে আওয়ামী লীগের ভূমিকা কী হবে তাও হবে দেখার বিষয়। ভয়েস অব আমেরিকার একটি জরিপে ৫৭ ভাগ লোক আওয়ামী লীগকে রাজনীতি করতে দেয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন। তবে বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী সলিমুল্লাহ খান মনে করেন আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ফেরার সম্ভাবনা নেই। এক আলোচনায় তিনি বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ তার নৈতিক বৈধতা হারিয়েছে। মুসলিম লীগ যেমন বিলুপ্ত হয়ে গেছে, তেমনি আওয়ামী লীগও বিলুপ্তির পথে রয়েছে। এটা আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।’

শেষ কথা বলে কিছু নেই 

এটা প্রায়ই বলা হয়, রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই। ৫ই আগস্টের অভাবনীয় অভ্যুত্থানের পরও বাংলাদেশ এক অস্থির সময় পার করছে। এটি কবে স্থির হবে সেটি বলা মুশকিল। সংশ্লিষ্ট কিছু সূত্র আভাস দিয়েছে, ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যেই বাংলাদেশে একটি নির্বাচন হতে পারে। যদিও এটি নানা যদি, কিন্তুর ওপর নির্ভর করে। এটা ঠিক, সক্রিয় রাজনৈতিক দলগুলো কখনও কখনও সরকারকে চাপে রাখলেও নিজ নিজ স্বার্থেই আবার তারা সরকারকে সমর্থন দেয়। তবে ছাত্র নেতৃত্ব যদি প্রভাব বিস্তার করতে পারে এমন কোনো দল গঠন করে তাহলে অঙ্ক জটিল হতে পারে। সীমান্ত পরিস্থিতির দিকেও নজর রাখছেন সবাই।

Share This