সেনাবাহিনীকে নিয়ে বানোয়াট গল্পে ফায়দা লোটার অপচেষ্টা দৃশ্যমান

সেনাবাহিনীকে নিয়ে বানোয়াট গল্পে ফায়দা লোটার অপচেষ্টা দৃশ্যমান

নিজস্ব প্রতিবেদক : January 20, 2025

ছাত্র-জনতার রক্তক্ষয়ী গণঅভ্যুত্থান সফলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নাম। ছাত্র-সেনা-জনতার শক্ত সেতুবন্ধে রূপান্তরিত হচ্ছে নতুন বাংলাদেশ। প্রধান উপদেষ্টা ড.মুহাম্মদ ইউনূসও বলেন, দেশের সম্মান ও গৌরব রক্ষায় জনগণের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছে সেনাবাহিনী। নতুন প্রাণের ঐকতানে জেগে ওঠার সময়ে দেশের সাধারণ মানুষের অন্তর্গত উপলব্ধিতে চির জাগরূক বাহিনীটি। তাদের দেশপ্রেম ঠাঁই করে নিয়েছে আজ ও আগামীর ইতিহাসের সোনালী পাতায়। কিন্তু পট-পরিবর্তনের পর থেকেই বিভিন্ন সময়ে দেশপ্রেমিক এই বাহিনীটিকে নিয়ে আজগুবি ও বানোয়াট গল্প তৈরি করে ফায়দা লোটার অপচেষ্টা দৃশ্যমান হয়ে ওঠেছে। সবশেষ এই অপতৎপরতার লক্ষ্যবস্তু হয়েছেন স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল মাহবুবুস সামাদ চৌধুরী।

 

শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) রাত থেকেই ইউটিউব এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তাকে নিয়ে শুরু হয় বেশুমার অপপ্রচার। আলী হোসেন শিশির নামের এক পোশাক কারখানার মালিককে ডিজির বাড়িতে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে বলে মিথ্যা প্রচার-প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে দেওয়া হয়। 

 

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টার (সিএ) প্রেস উইং থেকে পুরো বিষয়টিকে মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করা হয়েছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, অপরাধে অভিযুক্তকে ডিজির বাসায় আশ্রয় দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। অভিযোগ করা পোস্টগুলো পুরোপুরি মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এটি কোনো ধরনের তদন্ত ছাড়াই এসএসএফের ডিজি এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সুনাম ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া পোস্টগুলোর নিন্দা জানিয়ে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এটি অত্যন্ত দায়িত্বহীন একটি কাজ। এ ধরনের প্রচার উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এসএসএফ ডিজি ও সংস্থার ভাবমূর্তি নষ্ট করার অপচেষ্টা।

 

বর্তমানে দেখা গেছে, সত্যের চেয়ে মিথ্যার কাটতি বেশি। বাস্তবতার চেয়ে গুজবের চল বেশি। এটা বুঝে নেওয়ার জন্য পাণ্ডিত্যের প্রয়োজন নেই। বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে কিংবা ইতিহাস ঘেঁটে মানুষের এই অভ্যাস সহজেই বুঝে নেওয়া সম্ভব। সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন প্রবণতা আরও বেশি করে চোখে পড়েছে। সামাজিক মাধ্যমে নেতিবাচকতার ক্ষেত্রে সরকার বা সেনাবাহিনীর দায়িত্বশীল কারও নাম জুড়ে দেওয়া হলে আর তো কোন কথাই নেই। চুম্বকের মতো আকর্ষণ করে সবাইকে। গুজবের বন্যায় মুহুর্তেই সয়লাব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। জমজমাট লাইক, শেয়ার আর ভিউ বাণিজ্য। সম্ভবত ডিজি এসএসএফ এমন গুজব আর দেদার মিথ্যার শিকার হয়েছেন।

 

যদিও বিশ্লেষকরা বলছেন, ডিজি এসএসএফ সেনাবাহিনীর একজন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা। তাঁর সঙ্গে সেনাবাহিনী ও এসএসএফ’র নামটি জড়িয়ে আছে। তিনি এই পদে অধিষ্ঠিত হওয়ার আগে সেনাসদর দপ্তরের পদাতিক পরিদপ্তরের পরিচালক হিসেবেও সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রধান উপদেষ্টার দূরদর্শী, বিচক্ষণতা ও সুদূরপ্রসারি চিন্তা-চেতনার ফলেই তাকে এই পদে তিনি নিয়োগ দিয়েছেন। দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী ছাত্র-জনতার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে জুলাই-বিপ্লবের রক্তাক্ত পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছে। তাঁরা প্রমাণ করেছে সবার আগে দেশ। কিন্তু কোন কোন মহল নিজেদের অসৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে সেনাবাহিনীর উচ্চ পদস্থ গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের নিয়ে যেভাবে তথ্য সন্ত্রাস চালিয়ে যাচ্ছেন সেটি রীতিমতো বিপজ্জনক। দেশের জনগণের আস্থা ও বিশ্বাসের প্রতীক এই বাহিনীটিকে নিয়ে জঘন্য মিথ্যাচার, অপপ্রচার আর আষাঢ়ে গল্প সহ্যের সব সীমা অতিক্রম করেছে। তবে একাধিকবার সেনাপ্রধান ‘গুজবে’ কান না দিয়ে সবাইকে ধৈর্যশীল ও সহযোগী মনোভাব প্রদর্শন করার অনুরোধ জানিয়েছেন।

 

এক তরফা বানোয়াট সেই ভিডিওর কারসাজি; আওয়ামী লীগের সময়ে ছিলেন পদোন্নতি বঞ্চিত

অনুসন্ধানে জানা গেছে, বসুন্ধরা এলাকায় কে ব্লকে এসএসএফ ডিজিসহ তাঁর ১৩ জন কোর্সমেট নিজেদের কষ্টার্জিত সঞ্চয় ও ঋণের টাকায় যৌথভাবে ভবনটি নির্মাণ করেন। নিজের আওয়ামী লীগ রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততার তথ্য গোপন করেই ধুরন্ধর আলী হোসেন শিশির নামের পোশাক কারখানার মালিক বাসাটি ভাড়া নেন। আলী হোসেনকে গ্রেপ্তারের সময় পুলিশ ডিজি এসএসএফ’র সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি তাদের সব রকমের সহযোগিতা করেন। পুলিশ কখনও দাবি করেনি তিনি তাদের কোন সহযোগিতা করেননি। বরং পুলিশ তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি শিশিরকে গ্রেপ্তার করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান। কিন্তু ডিজি এসএসএফ’র দীর্ঘ চাকরি জীবনের অর্জিত সুনাম ক্ষুণ্ন করতেই একতরফা ভিডিও’র মাধ্যমে তাকে হেয় প্রতিপন্ন করার অপচেষ্টা চলছে। সূত্র জানায়, ওই ভাড়াটিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বাড়ির মালিকের একটি আইনি চুক্তি রয়েছে। ভাড়াটিয়াদের জন্য ডিএমপি’র নির্ধারিত ফরম্যাটও পূরণ করা হয়েছে। কিন্তু কোন ভাড়াটিয়ার ব্যাকগ্রাউন্ড চেক করার কোন ব্যবস্থা না থাকায় ভাড়াটিয়া এই সুযোগটি নিয়েছেন।

 

সূত্র মতে, গ্রেপ্তারকৃত আওয়ামী লীগ নেতা শিশির দলটির উচ্চ পর্যায়ের কোন নেতা নন। তিনি দলটির শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য। তিনি সারাজীবন নরসিংসদীতেই বসবাস করেছেন। মাত্র দু’বছর আগে তিনি ঢাকায় আসেন এবং নিজেকে সিআইপি হিসেবেই জাহির করতেন। তিনি অবাধে রাজধানীতে ঘুরে বেড়াতেন। এক্ষেত্রে তাঁর লুকিয়ে থাকার বিষয়টিও অবান্তর। মূলত গত ১৭ জানুয়ারি স্থানীয় একটি রেস্তোরায় একটি রাজনৈতিক দলের নেতারা তাকে দেখেন এবং কোন বাড়িতে তিনি থাকছেন এই বিষয়টি খুঁজে বের করতেই তাকে অনুসরণ করেন। কিন্তু তাকে গ্রেপ্তারের সময় করা ভিডিওটিতে দাবি করা হয়েছে, সেনাবাহিনীর কিছু কর্মকর্তা আওয়ামী লীগ নেতাদের আশ্রয় দিচ্ছেন। এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও অপতথ্য। একইভাবে তারা পুরো ঘটনায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানকেও জড়িয়েছেন। সমগ্র ঘটনাপ্রবাহে একটি স্বার্থান্বেষী মহলের দেশপ্রেমিক বাহিনীটির সর্বোচ্চ নেতৃত্ব থেকে শুরু করে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের ঘায়েল করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপতৎপরতা ছিল লক্ষণীয়।

 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চাকরি জীবনে মেধা, দক্ষতা ও যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখলেও পতিত সরকারের রোষানলে পড়েন স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) বর্তমান মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল মাহবুবুস সামাদ চৌধুরী। একাধিকবার পদোন্নতি বঞ্চিত হন তিনি। গত ৫ আগস্টের পট-পরিবর্তনের পর তিনি প্রথম ব্রিগেডিয়ার জেনারেল থেকে মেজর জেনারেল পদে পদোন্নতি পান। তিনি পাকিস্তান থেকে স্টাফ কলেজ সম্পন্ন করেন। এর পাশাপাশি মাহবুবুস সামাদ ৪৬ ব্রিগেডের ব্রিগেড মেজর থাকার সময়ে ২০০৭ সালের ১৩ জানুয়ারি কারফিউ ভঙ্গ করার অপরাধে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটনসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানা টিপু, সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ সাবিক বাদশাসহ বেশ কিছু নেতাদের গ্রেপ্তার করেন। এ কারণে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও তাঁর পদোন্নতি মেলেনি। দেশজুড়ে আলোচিত গ্রেপ্তারের বিষয়টি ওঠে এসেছে বছর তিনেক আগে ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রোটনের একটি অনুষ্ঠানের ভিডিও ভাষ্যেও। ইউটিউবে সেই ভিডিও আপলোড রয়েছে। যারপরেনাই স্বয়ং শেখ হাসিনা এই সেনা কর্মকর্তার ওপর ভীষণভাবে অসন্তুষ্ট ছিলেন।

 

সূত্র মতে, বারবার পদোন্নতি না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ মাহবুবুস সামাদ কর্নেল পদে থাকাকালীন ২০১৯ সালে পদত্যাগপত্র জমা দিলেও পরে সেটি গ্রহণ করা হয়নি। কিন্তু তিনি ও তাঁর ভাই ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সামাদ পতিত সরকারের টার্গেটে পরিণত হন। গত ৫ আগস্ট নতুন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পর তিনি কাক্সিক্ষত পদোন্নতি পান। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান তাকে মেজর জেনারেল পদে পদোন্নতি দিয়ে ডিজি এসএসএফ পদে নিয়োগ প্রদান করেন। কিন্তু তাকেই এখন ‘আওয়ামী লীগের দোসর’ ট্যাগ দিয়ে পরিকল্পিত মিথ্যাচারের ঘটনার সুলুক সন্ধান করতে গিয়ে মিলেছে চাঞ্চল্যকর এসব তথ্য।

 

সেনাপ্রধানকে নিয়েও নিয়েও মনগড়া, মতলবি ও নির্লজ্জ মিথ্যাচারে ক্ষোভ-অসন্তোষ

বিশ্লেষকরা আরও মনে করছেন, গত কয়েক মাসে বর্তমান সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানসহ বাহিনীটির আরও উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের নিয়ে মনগড়া, মতলবি ও নির্লজ্জ মিথ্যাচারের ঘটনা ঘটেছে দেশে-বিদেশে। বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম দক্ষ ও পেশাদার সুশৃঙ্খল একটি বাহিনীর সর্বোচ্চ ব্যক্তিকে নিয়ে গুজব-বিভ্রান্তি যারা ছড়াচ্ছেন সম্ভবত তারা ভুলে গেছেন ছাত্র-জনতার রক্তস্নাত বিপ্লবকে স্বার্থক ও সাফল্যমণ্ডিত করতে সেনাবাহিনীর দেশপ্রেমিক বিশেষণের মর্যাদা অক্ষরে অক্ষরে রেখেছেন জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান এর নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীই। বর্তমান সঙ্কটময় মুহুর্তে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাতেও কোন রকম হাকডাক না মেরে নীরবে-নিভৃতেই কাজ করে চলেছে তাঁরাই। মহান মুক্তিযুদ্ধে দেশের জন্য জীবনবাজি রেখে যুদ্ধ করে তাঁরা একটি মানচিত্রের জন্ম দিয়েছেন। জাতিসংঘের শান্তি মিশনে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে শান্তি স্থাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশের লাল সবুজের পতাকা সমুন্নত রেখেছেন। কিন্তু বোধ বিসর্জন দেওয়া ওই শ্রেণিটি এখন যেন সাধারণ কাণ্ডজ্ঞানও হারিয়ে ফেলেছেন। সবার মনে রাখা উচিত গুজব আর সাংবাদিকতা এক বিষয় নয়। দায়িত্বজ্ঞানহীনভাবে সাংবাদিকতা হয় না। গুজব আর অপপ্রচার রোধে দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার কোনো বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে দেশের মূলধারার গণমাধ্যমকে প্রভাবকের ভূমিকা পালন করতে হবে।

 

সম্প্রতি দেশের স্বনামধন্য সাংবাদিক-কলামিস্ট ও বাংলাভিশনের ডেপুটি হেড অব নিউজ মোস্তফা কামাল মনে করেন, সেনাবাহিনীর ৫ আগস্ট ও পূর্বাপর ভূমিকা দেশপ্রেমের দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে ইতিহাসের পাতায়। এ প্রসঙ্গে সম্প্রতি তিনি একটি কলামে লিখেছেন- ‘সেনাবাহিনী একটি রক্তাক্ত পরিস্থিতি কেবল মোকাবেলাই করেনি সাহসী মধ্যস্ততায় চমৎকার ফয়সালা রচনায় সেনাপ্রধান, তার কলিগ ও বাহিনীর সদস্যদের ভূমিকা ছিল অনেকের কাছে অকল্পনীয়। সেনাবাহিনীর এমন ভূমিকাকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কেউ কেউ চিহ্নিত করছেন ম্যাজিক নামে। ধর্ম-কর্মে বিশ্বাসীদের কাছে এটি ওপরওয়ালার রহমত। প্রকৃতিবাদীদের কাছে ন্যাচার অব প্রেয়ার। আর জনগণের কাছে সেটিই দেশপ্রেম। সেনাবাহিনী সেদিন কেবল রাজনৈতিক ফয়সালায় ভূমিকা রাখেনি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায়ও দেশপ্রেমের সাক্ষর রেখেছে। এমন কি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন সময়ে আহতদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থাও করেছে। দেশের বিভিন্ন সিএমএইচে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে। গুরুতর আহত কয়েকজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশও পাঠিয়েছে।’

 

তিনি আরও লিখেছেন- ‘গণতন্ত্র পুনুরুদ্ধারের পর এখন সুষ্ঠু –অবাধ নির্বাচনেও সেনাবাহিনীর অভিযাত্রার আকাঙ্ক্ষার কথা উঠে এসেছে বাহিনীটির প্রধানের সাম্প্রতিক কিছু বক্তব্যে। দেশি বিদেশি কয়েকটি গণমাধ্যমে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান কথার মধ্যে কোনো মেদ না রেখে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি দৃঢ় সমর্থন ব্যক্ত করে সোজাসাপ্টা বলেছেন-সেনাবাহিনী রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করবে না। ১৭ কোটি মানুষের দেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথ প্রশস্ত করতে বিচার বিভাগ, পুলিশ এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রয়োজনীয় সংস্কারে পাশে থাকার কথাও বলেছেন। এই সময়ে ধৈর্যের প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দিয়েছেন তিনি। অশান্তির পর দেশকে স্থিতিশীল করতে সরকারের প্রচেষ্টাকে সমর্থন করে বলেছেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নিশ্চিত এক সঙ্গে কাজ করলে ব্যর্থ হওয়ার কোনো কারণ নেই। এ ধরনের আত্মবিশ্বাস ও অঙ্গীকারের পর সামনে একটি সুন্দর-সুষ্ঠু-অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যাপারে আশাবাদ না জেগে পারে না।’

 

হাল সময়ে সব অপপ্রচার আর মিথ্যাচারকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে দীর্ঘ কন্টকাকীর্ণ পথে ষড়যন্ত্রের কুহেলী জাল ভেদ করে একাত্তর আর চব্বিশের সুমহান চেতনা, সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব আর দৃঢ় মনোবলের মাধ্যমে কর্তব্যপরায়ণতার সারি সারি চিত্রপট রচনা করে আলোর পথে দুর্বার গতিতেই এগিয়ে যাবে বাঙালি জাতির শ্বাশ্বত গর্ব ও আস্থার প্রতীক বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। অতীতের মতো এবারও নিজের নেতৃত্বের মুন্সীয়ানায় দেশবিরোধী প্রতিটি ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের যবনিকাপাত ঘটিয়ে দেশপ্রেমের স্বাতন্ত্রিকতায় অবিচল থাকবেন জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান এমন প্রত্যাশা দেশের সচেতন সাধারণ মানুষের।

Share This