বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গত নির্বাচনের হিসাব করলে দেখা যাবে জামায়াতে ইসলামীর ভোট ৫-৬ পার্সেন্ট। রাতারাতি লাফ দিয়ে তাদের ভোট ৫১ পার্সেন্ট হয়ে যাবে না।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজ মাঠে বিএনপি আয়োজিত ‘চলোজি ভাই হাঁরঘে পদ্মা বাঁচাই’ শ্লোগানে পদ্মার নায্য পানি বণ্টনের দাবিতে আয়োজিত গণসমাবেশে দলটির মহাসচিব এসব বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, এই দেশের মানুষ ধর্মপ্রিয়। ধর্মকে ভালোবাসে। আল্লাহর নবীকে ভালোবাসে, বিশ্বাস করে। কিন্তু ধর্মান্ধ নয়, সাম্প্রদায়িক নয়। গত নির্বাচনের হিসাব করে দেখেন। কত পার্সেন্ট ভোট পেয়েছে জামায়াতে ইসলামী। পাঁচ-ছয় পার্সেন্ট। রাতারাতি লাফ দিয়ে ৫১ পার্সেন্ট হয়ে যাবেন- এটা মনে কইরেন না। বাংলাদেশের মানুষ সহজে আপনাদের ভোট দেবে না। কারণ আপনাদেরকে তারা বিশ্বাস করে না।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘পাকিস্তান আন্দোলন করেছিলেন মুসলমানরা। পাকিস্তান আন্দোলন ছিল মুসলমান ভাইদের স্বার্থ রক্ষার জন্য, অধিকাংশ মানুষ মুসলিম। আপনাদের নেতা মওদুদী এটার বিরোধিতা করেছিল।’
জামায়াত নেতাদের উদ্দেশ করে ফখরুল বলেন, ‘১৯৭১ সালে আমরা যে স্বাধীনতা যুদ্ধ করলাম, আপনারা শুধু এটার বিরোধিতাই করেন নাই পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে গণহত্যা করেছেন। এ কথা বলতে আমার কোনো দ্বিধা হয় না। কারণ আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। আমি এই দেশের স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেছি। আজকে উল্টা-পাল্টা, আবোল-তাবোল, সোশ্যাল মিডিয়াতে কথা বলে আমাদের মাথা নামাতে পারবেন না।’
ফখরুল বলেন, প্রধান উপদেষ্টা যে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমার্ধে, এই নির্বাচন হতে হবে। এই নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। এই নির্বাচন দিতে যত দেরি হচ্ছে বাংলাদেশ তত দুর্বল হচ্ছে। জনগণের সমর্থন ছাড়া কোনো সরকার সফলতার সঙ্গে দেশ চালাতে পারে না। জামায়াতের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা খুব পরিষ্কার করে বলছি- আপনারা ভালো হয়ে যান। এই নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি তো অনেক আগে থেকে শুরু হয়েছে। কেন মানুষকে বোকা বানাচ্ছেন। আপনাদের যত বিলবোর্ড দেখলাম, অন্য কোনো দলের তো এতো দেখলাম না। যতো পোস্টার দেখলাম, অন্য কোনো দলের এতো দেখলাম না। তাহলে কেন মানুষকে বোকা বানাচ্ছেন। আপনারাতো নির্বাচন করবেন। নির্বাচন না করলে আপনাদের অস্তিত্ব থাকবে না। নির্বাচন করলে আপনারা পরাজিত হবেন, তাই নির্বাচন পেছাতে চান।
এক কোটি কর্মসংস্থান করবে বিএনপি
মির্জা ফখরুল বলেন, আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে, এক কোটি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। কৃষকদের নায্যমূলে সার-বীজ দেওয়ার জন্য ফার্মার্স কার্ড দেওয়া হবে। আমাদের নির্বাচিত করা হলে ইনশাআল্লাহ আমরা পানির নায্য হিস্যা পাবো।
ফখরুল বলেন, ১৯৭৬সালে মজলুম জননতো মাওলানা ভাষানী ফারাক্কা অভিমুখে মার্চ করেছিলেন তারই পরিপ্রেক্ষিতেএই দেশের স্বাধীনতার ঘোষক বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান পদ্মার পানি হিস্যা নিয়ে ভারতের সঙ্গে প্রথম পানি চুক্তি করেছিলেন ১৯৭৭ সালে। তারপরই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া জাতিসংঘে পদ্মার পানির নায্য হিস্যার কথা তুলেছিলেন। পরবর্তীতে ফ্যাসিস্ট হাসিনা ১৯৯৬ সালে একটি চুক্তি করেছিল, কিন্তু তার গ্যারান্টি ছিল না, যা আগামী বছর শেষ হবে। আমি জানি না ভারত কোনো পদক্ষেপ নেয় কি না।