ফেনীতে একটি ক্যান্টনমেন্ট কেন প্রয়োজন
সাহাব উদ্দিন শিপন
December 06, 2024
ফেনীতে একটি ক্যান্টনমেন্ট কেন প্রয়োজন?
ফেনী জেলা বাংলাদেশের ভৌগোলিক ও কৌশলগত দিক থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল। এটি চট্টগ্রাম বিভাগের একটি প্রবেশদ্বার হিসেবে কাজ করে যা দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলের উন্নয়ন এবং নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। তবে এই গুরুত্বপূর্ণ জেলায় এখনো কোনো ক্যান্টনমেন্ট নেই, যা প্রয়োজনীয় সামরিক প্রস্তুতি ও আঞ্চলিক নিরাপত্তার দিক থেকে একটি বড় ঘাটতি। তাই ফেনীতে একটি ক্যান্টনমেন্ট প্রতিষ্ঠা সময়ের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ফেনী চট্টগ্রাম ও ঢাকার সংযোগস্থলে অবস্থিত। এর পূর্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের নিকটবর্তী এলাকা হওয়ায়, এটি দেশের ভৌগোলিক নিরাপত্তার জন্য একটি সংবেদনশীল অঞ্চল। ক্যান্টনমেন্ট স্থাপিত হলে এই অঞ্চলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি জরুরি সময়ে দ্রুত সেনা মোতায়েন সম্ভব হবে। একই সঙ্গে এটি সীমান্তবর্তী এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করতে সহায়তা করবে যা দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ফেনী একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ এলাকা। ঘূর্ণিঝড়, বন্যা বা অন্য যেকোনো দুর্যোগে ক্যান্টনমেন্ট থাকা মানে সেনাবাহিনী খুব দ্রুত ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে। এতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় এই অঞ্চলের মানুষের জীবনমান উন্নত হবে।
ক্যান্টনমেন্ট স্থাপনের ফলে ফেনীর অর্থনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে। সামরিক অবকাঠামো তৈরির জন্য নতুন রাস্তা, সেতু এবং অন্যান্য উন্নয়নমূলক প্রকল্প হাতে নেওয়া হবে, যা স্থানীয় জনগণের জন্য কর্মসংস্থান তৈরি করবে। এছাড়া ছোট ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান যেমন দোকান, হোটেল এবং পরিবহন খাতেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
ক্যান্টনমেন্ট প্রতিষ্ঠার ফলে ফেনী অঞ্চলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হবে। সেনাবাহিনীর উপস্থিতি স্থানীয় জনগণের মধ্যে নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতা তৈরি করবে।
দেশের সামগ্রিক নিরাপত্তার জন্য প্রতিটি কৌশলগত স্থানে সামরিক স্থাপনার প্রয়োজন। ফেনীতে একটি ক্যান্টনমেন্ট স্থাপিত হলে এটি দেশের পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্তের নিরাপত্তা জোরদার করবে এবং জাতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও সুদৃঢ় হবে।
ফেনীর ভৌগোলিক অবস্থান, প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণতা এবং আর্থসামাজিক গুরুত্ব বিবেচনা করলে এখানে একটি ক্যান্টনমেন্ট স্থাপন অত্যন্ত জরুরি। এটি শুধুমাত্র আঞ্চলিক নিরাপত্তা এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় ভূমিকা রাখবে না বরং ফেনীর অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের দিকেও নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। এখন সময় এসেছে এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার।
Share This