বিশ্বের দুটি প্রধান বন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ডিপি ওয়ার্ল্ড এবং এ.পি. মোলার-মায়েস্ক বাংলাদেশের জাহাজ শিল্পে বড় বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) সুইজারল্যান্ডের দাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের সম্মেলনের ফাঁকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে ডিপি ওয়ার্ল্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও এ.পি. মোলার-মায়েস্কের চেয়ারম্যান এই আগ্রহের কথা জানান।
ডিপি ওয়ার্ল্ডের সিইও সুলতান আহমেদ বিন সুলায়েম বলেন, আমরা নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনালে বিনিয়োগ করতে চাই, যার লক্ষ্য চট্টগ্রাম বন্দরে যানজট কমানো এবং বন্দরের দক্ষতা বৃদ্ধি করা। চট্টগ্রাম বন্দরের কাছে নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনালে বিনিয়োগ বাংলাদেশকে আরও বেশি বিদেশি সরাসরি বিনিয়োগ আকর্ষণ করবে। দূষণ কমাতে সহায়তা করবে। ডিপি ওয়ার্ল্ড যেখানেই বিনিয়োগ করেছে, প্রতিটি দেশেই এটি ঘটেছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা ২০২২ সালে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে চেয়েছিলাম কিন্তু তৎকালীন সরকার আমাদের অগ্রাহ্য করেছে।
সুলতান আহমেদ বিন সুলায়েম বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে একটি ডিজিটাল অনলাইন শুল্ক পদ্ধতি চালু করতে চাই, যা দুর্নীতি ব্যাপকভাবে হ্রাস করতে সাহায্য করবে। বাংলাদেশে ইনলাইন কনটেইনার ডিপোতেও বিনিয়োগ করতে চাই।
প্রধান উপদেষ্টা ডিপি ওয়ার্ল্ডের সিইওকে বলেন, বাংলাদেশ চট্টগ্রাম বন্দরকে আরও দক্ষ করে তুলতে এবং বঙ্গোপসাগরের উপকূলে আরও বন্দর তৈরি করতে চায়। আমাদের এটি করতে হবে, কারণ আমাদের ভবিষ্যৎ চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে জড়িত। আমরা এটিকে এই অঞ্চলের বৃহত্তম বন্দরে পরিণত করতে চাই।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ চট্টগ্রাম বন্দরের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে চাই। এটি উত্তর-পূর্ব ভারতীয় রাজ্যগুলো এবং নেপাল ও ভুটান সহ অন্যান্যদের জন্য কনটেইনার পরিবহনের জন্য একটি আঞ্চলিক কেন্দ্র হতে পারে। আমাদের এটি দ্রুত করতে হবে।
ডেনিশ কোম্পানি এ.পি. মোলার-মায়েস্কের চেয়ারম্যান রবার্ট মায়েরস্ক উগলা বলেন, আমরা চট্টগ্রাম বন্দরের কাছে অবস্থিত লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনালে বিনিয়োগ করতে চাই। আমাদের কারিগরি সহায়তায় এটিকে একটি সবুজ বন্দরে রূপান্তরিত করতে চাই।
রবার্ট উগলা আরও বলেন, আমরা মরক্কো এবং ওমানেও একই ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছি। আমাদের বিনিয়োগের মাধ্যমে ওমানের সালালাহ বন্দর বিশ্বের সেরা বন্দরগুলোর মধ্যে একটিতে পরিণত হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা ডিপি ওয়ার্ল্ড এবং এ.পি. মোলার-মায়েস্ক কর্মকর্তাদের সুনির্দিষ্ট বিনিয়োগ প্রস্তাব নিয়ে ঢাকা সফরের আমন্ত্রণ জানান।
ড. ইউনূস বলেন, আঞ্চলিক ব্যবসায়িক কেন্দ্র হিসেবে আমাদের পূর্ণ সম্ভাবনা কাজে লাগানোর জন্য বঙ্গোপসাগরের উপকূলে আমাদের একাধিক বন্দর নির্মাণ করতে হবে। বাংলাদেশি বন্দরগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য এফডিআইকে স্বাগত জানাই।