মানবতাবিরোধী অপরাধের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। মৃত্যুদণ্ড পাওয়া শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফেরাতে দিল্লিতে চিঠি দেবার কথা অন্তর্বর্তী সরকারের। তবে দিল্লিতে চিঠি গেছে কি না, সেটি সরকারের তরফ থেকে এখনো প্রকাশ করা হয়নি। সরকারের পররাষ্ট্রসচিব আসাদ আলম সিয়াম এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফর নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। প্রশ্নোত্তর পর্বে শেখ হাসিনাকে ফেরানো নিয়ে দিল্লিতে চিঠি পাঠানোর প্রশ্ন এড়িয়ে যান।
শেখ হাসিনাকে ফেরাতে দিল্লিতে চিঠি পাঠানো হয়েছে কিনা এবং চিঠি পাঠানোর প্রক্রিয়া কি হবে, জানতে চান এক সাংবাদিক। জবাবে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, দেখুন, এই সংবাদ সম্মেলন এবং সংবাদকর্মীদের সঙ্গে যে আলাপ হচ্ছে; এটা একইসঙ্গে থিম্পুতে হচ্ছে। এটা খুবই অসৌজন্যমূলক হবে যদি আমরা এটা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বাহিরে অন্য কোনো আলোচনা করি। আমি আশা করি, আপনারা বুঝবেন এবং আলোচনাটা দ্বিপাক্ষিক সফরের ক্ষেত্রেই; সেই আত্ততায় থাকলে দুদেশের জন্য সৌজন্যমূলক হয়।
আসাদ আলম সিয়ামের কৌশলী জবাবের পাল্টা প্রশ্নে এক সংবাদিক বলেন, আমরা এটা আলাদা রাখতে চাই। এটা সফরের বাহিরের প্রশ্ন। আপনি বলেছেন, আঞ্চলিক বিষয়ে আলোচনা হবে, সেক্ষেত্রে প্রতিবেশীর কথা আসতেই পারে। জবাবে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, আঞ্চলিক বিষয় বলতে আমরা সার্ক ও বিমসটেক বোঝাচ্ছি। আমরা আমাদের বিষয়েই থাকি।
পরে সন্ধ্যায় মন্ত্রণালয় ছাড়ার সময় পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের মুখোমুখি হন সাংবাদিকরা। একই প্রশ্ন করা হয় উপদেষ্টাকেও। তবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি তিনি।
জুলাই আন্দোলনের সময়ে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
রায়ের পর সোমবার পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছিলেন, শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে ফেরাতে আজ রাতে (সোমবার) বা কাল (মঙ্গলবার) সকালে এই চিঠি যাবে। পরদিন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জানিয়েছিলেন,
শেখ হাসিনাকে ফেরাতে ভারতের কাছে বাংলাদেশ সরকার যে চিঠি পাঠাবে, সেটি প্রস্তুত হচ্ছে। নোট ভারবালের মাধ্যমে এই চিঠি পাঠানো হবে। উপদেষ্টা জানান, রায়ের কপি পাঠাবে না পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। শুধুএকটি নোট ভারবালের রায়ের বিষয়টি জানিয়ে শেখ হাসিনাকে হস্তান্তর করতে বলা হবে।
গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। ওই সময়ে শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নেন। ভারতে থাকা বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় ফেরত চেয়ে চিঠি দেয় অন্তর্বর্তী সরকার। সেই চিঠির জবাব আসেনি।